সূরা ফাতিহা ব্যাখ্যা এর ফজিলত ও আমল,এর সম্পর্কে হাদিস এটি পাঠের উপকারিতা গুলো জেনে নিন

সূরা ফাতিহা ব্যাখ্যা

সূরা ফাতিহা ব্যাখ্যা এবং এর ফজিলত গুলো বিভিন্ন ইসলামিক স্কলার এবং তাফসিরবিদগণ নিয়ে বিশদ আলোচনা করেছেন। কারণ এটি কোরআনমাজিদের প্রথম সূরা। এটি মহান আল্লাহ তায়ালার প্রশংসা এবং তার ক্ষমতা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। ,মহান আল্লাহ এর সাথে কথা বলার অন্যতম মাধ্যম হলো এই সূরা। এটি অনেক গুরুত্তপূর্ণ আমাদের সবার জন্য। আজকের কন্টেন্টে আমরা সূরা ফাতিহা ব্যাখ্যা এবং এর ফজিলত। উপকারিতা এবং এর আমল সম্পর্কে বর্নীত হাদিসগুলো নিয়ে আলোচনা করবো। তাই দইয়া করে পড়ার অনুরোধ রইলো। 

সূরা ফাতিহা ব্যাখ্যা

সূরা ফাতিহা ব্যাখ্যা গুলো জেনে নিন

আমরা সকলেই জানি কোরআন মাজিদে ১১৪ টি সূরা রয়েছে যার মধ্যে এটি হলো প্রথম। এই সূরায় মহান আল্লাহ তায়ালার প্রশংসা করা হয়েছে এবং তিনি তার বান্দাদের কে অনুগ্রহ দান করেছেন যা আর কোনো সূরা তে এরকম বলা হয়নি। সূরা ফাতিহা মুসলিমদের জীবনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সূরা হিসাবে বিবেচিত হয়ে থাকে। এটি মুসলিমদের প্রাথমিক শিক্ষামূলক অংশ হিসাবে গণ্য করা হয়ে থাকে এবং এটি প্রতিটি রাকাতের শেষে পড়া হয় রাকাতের সমাপ্তির সময় এবং তার আগের পরিমাণ রাকাতের জন্য আল্লাহর প্রার্থনা করার জন্য। সূরা ফাতিহা ব্যাখ্যা আমরা বর্ণনা করে শেষ করতে পারবোনা। নিচে কিছু ব্যাখা দেওয়া হলোঃ

  • আলহামদুলিল্লাহ: এই সূরা তে শুরু হয় একটি প্রশংসা দ্বারা, যা অনুসারে আল্লাহ তাঁর সকল কৃতিত্ব এবং মহিমা জানানো হয়। এটি আল্লাহ প্রশংসা করার জন্য মুসলিমদের প্রচেষ্টা করতে উৎসাহিত করে।
  • রাব্বিল আলামীন: এই বাক্যের অর্থ “সমস্ত বিশ্বের পালনকর্তা”। এটি সূরা ফাতিহার মাধ্যমে প্রকাশিত হয় যে আল্লাহ তাঁর আদেশ এবং মহান ক্রিয়াকলাপ দ্বারা সমস্ত সৃষ্টির পালন করেন। এটি আমাদেরকে সত্যিকারের আল্লাহের প্রতি আদর্শ বিশ্বাস ও আত্ম-সমর্পণ বোধ করায়।
  • আর রাহমানির রাহীম: সূরা ফাতিহায় বলা হয়, “মেঘকে তৈরি করেন মহান রহমত প্রদানকারী আর দয়ালু।” এই বাক্যের মাধ্যমে আল্লাহ তাঁর অসীম করুণাময়তা ও প্রেমপূর্ণ স্বভাব জানানো হয়। এটি আমাদেরকে আল্লাহের নিকট সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য পরামর্শ করে।
  • মালিকি ইয়াউমিদ্দিন: এই বাক্যের মাধ্যমে আমরা আল্লাহের উপর বিশ্বাস এবং আমাদের সব কাজের বিচার এবং ন্যায়পরায়ণতার বিষয়ে পরিপূর্ণ বিশ্বাস করার উদ্দেশ্যে বোধ করায়।
  • ইয়াকা না’বুদু: এই বাক্যের অর্থ “আপনাকেই আমরা পূজা করি এবং আপনার কাছেই সাহায্য চাই”। এটি আল্লাহের আল্লাহের সমর্থন, সন্তুষ্টি এবং গাইডেন্স ব্যতিক্রমহীনতা বিষয়ে আমাদের প্রার্থনা করতে উৎসাহিত করে। সূরা ফাতিহা একটি ব্যাক্তিগত ও সামাজিক স্তরে আল্লাহের প্রতি সংকটের সময় মানসিক স্থৈর্য এবং পরামর্শ প্রদান করে।
  • ইয়াকা নাস্তাঈন: এই বাক্যের মাধ্যমে আমরা আল্লাহের সাহায্য এবং নিদানের জন্য আপনার কাছে প্রার্থনা করি। এটি আমাদেরকে আল্লাহের দিকে ত্বরান্বিত হতে উৎসাহিত করে এবং আমাদের প্রতিটি কাজে আল্লাহের সাহায্য অর্জনের জন্য বিনয় ও নিদানের সাথে আল্লাহের দিকে ত্বরান্বিত হওয়ার উদ্দেশ্যে প্রেরণ করে।

সূরা ফাতিহা একটি ক্ষুদ্র সূরা হলেও এটি ইসলামিক আদায়গত জীবনে অপরিহার্য পরিপূর্ণ।

সূরা ফাতিহার ফজিলত এবং আমল

সূরা ফাতিহার কয়েকটি ফজিলত ও আমল

সূরা ফাতিহার ফজিলত এবং আমল গুলো অনেক রয়েছে যা পালন করা আমাদের জন্য অনেক মঙ্গলজনক। নিচে কয়েকটি দেওয়া হলোঃ 

  1. সব নামাজের প্রথম রাক্যায় এটি পড়া হয়। এটি নামাজের মূল অংশ হিসাবে পরিগণিত হয় এবং নামাজের বৈশিষ্ট্য ও মান্যতা বৃদ্ধি করে।
  2. যে মুসলিম ব্যক্তি সূরা ফাতিহা পড়ে ওযু সম্পন্ন করে এবং সূরা ফাতিহা দ্বারা নামাজ করে, তার জন্য একটি বাড়তি পুরস্কার আছে।
  3. সূরা ফাতিহা পাঠ করা আমাদেরকে আমাদেরকে আল্লাহর কাছে সন্তুষ্টি অর্জনের পথ প্রদর্শন করে।
  4. সূরা ফাতিহা পাঠ করে কোনো রুগিকে ফু দিলে বা পানিপড়া দিলে মহান আল্লাহ তাকে সুস্থ করে  দেন। 

এছাড়াও আরো অনেক ফজিলত রয়েছে এই সূরা নিয়ে। 

আরোও পড়ুনঃ সালাতুল হাজত নামাজের নিয়ম ও ফজিলত

সূরা ফাতিহা সম্পর্কে ৩টি হাদিস

নিচে ৩টি হাদিস দেওয়া হলো এই সূরা সম্পর্কেঃ 

  1. আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “আল-হামদুলিল্লাহ সূরা ফাতিহার জন্য সূরা, যা আল-কুরআনের সম্মানিত অংশ।”(সহিহ মুসলিম)
  2. আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “আমি তোমাদের মধ্যে সূরা ফাতিহা দিয়ে নামাজ পড়ছি এবং সেই সময় আমার মন এবং উম্মতের মন মধ্যে একটি কথা আছে।”
  3. আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “কেউ যদি সূরা ফাতিহা না জানে তবে তার নামায পূর্ণ হয়না।

রোগ নিরাময়ে সূরা ফাতিহার ফজিলত

বলা হয়ে থাকে সূরা ফাতিহা সব রোগের ওষুধ। মনাহ আল্লাহ তায়ালা কঠিন রোগকে ভালো করে দেন সূরা ফাতিহার উছিলায়। নিচে কয়েকটি দেওয়া হলোঃ 

  • কেউ যদি কঠিন রোগে আক্রান্ত হয় এবং কোনো আমলদার ব্যাক্তি সূরা ফাতিহা পড়ে মহান আল্লাহর কাছে তার জন্য দোয়া করে তাহলে মহান আল্লাহ তাকে সুস্থ করে দেন।
  • কোনো গাছে ফল না ধরলে সেটির মধ্যে এই সূরা পড়ে পানি ছিটিয়ে দেওয়া হয় তাহলে সেই গাছ অ্যা ফল আসে।
  • যেকোনো রোগ থেকে মুক্তির জন্য বেশি বেশি এটি পড়া উত্তম।

আরোও পড়ুনঃ হাসবুনাল্লাহু ওয়া নি’মাল ওয়াকিল

সূরা ফাতিহা ব্যাখ্যা নিয়ে কিছু প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন১; এটি কোরআনের কততম সূরা?

উত্তরঃ ১ম সূরা

প্রশ্ন২ঃ এটির আয়াত সংখা কত?

উত্তরঃ ৭

প্রশ্ন৩ঃ এটি কোথায় অবতীর্ণ হয়েছে?

উত্তরঃ মক্কায় 

প্রশ্ন৪ঃ ফাতিহা শব্দটি আরবি কোন শব থেকে এসেছে?

উত্তরঃ ফাতহুন।

প্রশ্ন৫ঃ কোন সূরা নাযিল হওয়ার কারণে ইবলিশ অসন্তোষ্ঠ হয়েছিলো?

উত্তরঃ সূরা ফাতিহা

সূরা ফাতিহা আমাদের কি শিক্ষা দেয়

এই সূরা আমাদের অনেক কিছু শিক্ষা দেয়। এটি অনেক ভালো সূরা। এটি আমাদের শিখায় মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের পালনকর্তা, আমরা একমাত্ত্র তার প্রশংসা। আমাদেরকে তার কাছেই মুখাপেক্ষি হতে হবে। তিনি ছাড়া আমাদের আর কোনো মালিক নাই। তিনিই আমাদের রিজিকদাতা এবং বিচার দিবসের মালিক। আমরা কোনো অপরাধ করলে তিনি আমাদের বিচার করবেন আর কোনো ভালো কাজ করলে তিনি আমাদের উপহার দিবেন। 

উপসংহার

সূরা ফাতিহা ব্যাখ্যা এবং এর ফজিলত নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। আশা করে বুঝতে পেরেছেন কেনো এটি অনেক গুরুত্তপূর্ণ। আমাদের সকলের এই সূরার ফজিলত গুলো জেনে রাখা ভাও। এটি সবথেকে ভালো সূরার মধ্যে একটি। আমরা এই সূরা আমাদের জীবনের সঙ্গী বানিয়ে নিবো আমাদের ভালোর জন্য। 

2 Comments on “সূরা ফাতিহা ব্যাখ্যা এর ফজিলত ও আমল,এর সম্পর্কে হাদিস এটি পাঠের উপকারিতা গুলো জেনে নিন”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *