ঋণ পরিশোধ না করার শাস্তি এবং ঋণ পরিশোধ করার উপায়

ঋণ পরিশোধ না করার শাস্তি

আপনি যদি ঋন পরিশোধ না করতে পারেন তাহলে আপনাকে ঋণ পরিশোধ না করার শাস্তি পেতে হবে। কারণ মহান আল্লাহ সবকিছু ক্ষমা করে দিলেও তিনি বান্দার হক কখনোই মাফ করেননা। বান্দার হক বলতে আপনি কারো কাছ থেকে কোনো কিছু ধার করেছেন,কারো সম্পদ আত্মসাৎ করেছেন, কারো টাকা মেরে দিলেন। আপনাকে অবশ্যই কারো কাছ থেকে ঋন করলে সেই ঋন পরিশোধ করতে হবে। আজকের কন্টেন্ট এ আমরা ঋণ পরিশোধ না করার শাস্তি, ঋণ থেকে মুক্তির দোয়া,ঋণ পরিশোধ করার উপায় ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করবো। তাই দয়া করে পূরো কন্টেন্টটি পড়ার অনুরোধ রইলো। 

ঋণ পরিশোধ না করার শাস্তি

ঋণ পরিশোধ না করার শাস্তি

ঋন হলো কারো কাছে থেকে কোনো কিছু ধার নেওয়া। সেটা হতে পারে অর্থ, বস্তু,সম্পদ ইত্যাদি। আপনি যদি কারো কাছ থেকে কোনো ধার করেন তাহলে সেটি অবশ্যই পরিশোধ করতে হবে। মহান আল্লাহ ঋনকারী ব্যাক্তিদের ক্ষমা করেন না। ঋন পরিশোধ না করার শাস্তি হলো সে যদি মারা যায় তাহলে তার রুহ ঝুলন্ত অবস্থায় থাকে যতক্ষন না তার ঋন পরিশোধ না করা হচ্ছে। আর কিয়ামতের মাঠে ঋনগ্রস্ত ব্যাক্তিদেরকে মহান আল্লাহ ঋন পরিশোধ করার জন্য বলবেন। দরকার হলে তাদের আমল দিয়ে ঋন পরিশোধ করতে হবে। 

ঋণ পরিশোধ করার উপায়

ঋণ পরিশোধ করার উপায়

ঋন করলে আপনাকে ঋন পরিশোধ করতে হবে। কারণ এটি বান্দার হক। ঋন পরিশোধ করার বিভিন্ন উপায় রয়েছে। নিচে কয়েকটি ঋণ পরিশোধ করার উপায় দেওয়া হলোঃ 

  1. ঋন পরিশোধ করার পরিকল্পনা করুনঃ আপনি যাদের কাছে ঋনী তাদের লিস্ট করেন। তাদের সাথে পরামর্শ করেন এবং একটি সময় নির্ধারণ করেন কখন এবং কিভাবে পরিশোধ করেন। 
  2. সাপ্তাহিক বা মাসিক পরিকল্পনার মাধ্যমেঃ যার কাছ থেকে ধার করেছিলেন তার সাথে কথা বলুন কিভাবে কি করা যায়। তাকে আপনার সমস্যার কথা বুঝ্যে বলুন এবং সাপ্তাহিক বা মাসিকভাবে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দিতে পারেন। এতে আপনার উপর চাপ কম থাকবে এবং একসময় সব টাকা পরিশোধ হয়ে যাবে।
  3. টাকা সংগ্রহ করুনঃ যার কাছে আপনি ঋনী তার ঋনের পরিমাণ নির্ধারণ করে তার কাছে থেকে একটি সম্ভাব্য সময় নিয়ে টাকা জোগাড় করা শুরু করুন। এবং টাকা জোগাড় করার পড় তা পরিশোধ করুন। 
  4. আপনার আয় এবং ব্যায় সম্পর্কে জানুনঃ এটি খুব গুরুত্তপূর্ন যে আপনার আয় সম্পর্কে জানা। আপনি মাসে কতো আয় করতেছেন তা জানুন এবং কতো ব্যায় হচ্ছে এবং কিভাবে ব্যায় হচ্ছে তা নির্ধারণ করুন। তার পরে দেখুন যে আপনার আয় এবং ব্যায় এর মধ্যে পার্থ্যক্য। যে পরিমান টাকা অবশিষ্ট থাকে তা দিয়ে ঋন পরিশোধ করুন। অথবা ব্যায় কমানোর চেস্টা করে ঋন পরিশোধ করুন। 
  5. মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে প্রার্থনা করুন আপনার ঋন পরিশোধ সহজ করার জন্য। 

আরোও পড়ুনঃ হতাশা নিয়ে কোরআনের আয়াত

ঋণ থেকে মুক্তির দোয়া আরবি এবং বাংলা অর্থসহ

ঋণ থেকে মুক্তির বিভিন্ন ধরণের দোয়া রয়েছে যেগুলা পাঠ করলে মহান আল্লাহ তায়ালা আপনার ঋন পরিশোধ করার জন্য উপায় খুলে দিবেন। নিচে ঋন থেকে মুক্তির ২টি দোয়া দেওয়া হলোঃ

 ১. দোয়া নং ১ঃ 

اللَّهُمَّ اكْفِنِي بِحَلالِكَ عَنْ حَرَامِكَ وَأَغْنِنِي بِفَضْلِكَ عَمَّنْ سِوَاكَ

অর্থঃ হে আল্লাহ, আপনি আপনার হালাল আর্জনের মাধ্যমে আমাকে যথেষ্ট করে দিন অস্বীকৃতির কাজে অংশ নেবার জন্য এবং আপনার করুণার মাধ্যমে আমাকে আর কারও উপরিত্যক্ত করুণ দিন।

২. দোয়া নং ২:

رَبِّ أَدْخِلْنِي مُدْخَلَ صِدْقٍ وَأَخْرِجْنِي مُخْرَجَ صِدْقٍ وَاجْعَلْ لِي مِنْ لَدُنْكَ سُلْطَانًا نَصِيرًا

অর্থঃ হে রব্, আমাকে সত্যের উদ্দেশ্যে প্রবেশ করতে দিন এবং সত্যের পথে আমাকে বের করতে দিন এবং আপনার দ্বারা আমার জন্য সহায়তা করার জন্য একটি শক্তিশালী সাহায্যকারী করুণ করেন।

উপরোক্ত দোয়া গুলো পাঠ করতে পারেন তাহলে মহান আল্লাহ তায়ালা আপনাকে একটি ব্যাবস্থা করে দিবেন ইনসাল্লাহ। মনে রাখবেন, দোয়ার পাশাপাশি প্রয়াসও করতে হবে এবং নিয়মিতভাবে পরিশোধ করতে হবে।

 নিয়মিত ঋণ পরিশোধের গুরুত্ব

ঋণ পরিশোধ করার গুরুত্ব রয়েছে। কারণ নিয়মিত ঋণ পরিশোধ করলে আপনার প্রতি মানুষের আস্থা বেড়ে যায়। নিচে কয়েকটি গুরুত্ব দেওয়া হলোঃ 

  1. আর্থিক স্বাধীনতাঃ ঋণ পরিশোধ আপনাকে আর্থিক স্বাধীনতা দেয়। কারণ যখন আপনি ঋণ পরিশোধ করবেন তখন আপনি যে কারো দায়বদ্ধতা থেকে বের হতে পারবেন।
  2. সুদের বেড়াজাল থেকে মুক্তিঃ আপনি যদি সুদের মাধ্যমে ঋণ নেন তাহলে আপনাকে প্রতি মাস এ একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা ঋণদাতাকে দিতে হয়। আপনি যদি নিয়মিত তা পরিশোধ করতে না পারেন তাহলে আপনাকে অনেক জরিমান দিতে হয়। আর আপনি যদি সময়মতো পরিশোধ করেন তাহলে এটি থেকে মুক্তি পাবেন।
  3. ঋণদাতার আস্থা অর্জনঃ আপনি নিয়মিত এবং সময়মতো ঋণ পরিশোধ করলে ঋনদাতা আপনার প্রতি ভালো আস্থে অর্জন হয়। যার ফলে আপনি অন্য কোনো বিপদে পড়লে তার থেকে সাহায্য পেতে পারেন। 

আরোও পড়ুনঃ সুদ খেলে কি নামাজ হবে?

উপসংহার

ঋণ পরিশোধ না করার শাস্তি এবং ঋণ পরিশোধ করার উপায় নিয়ে আমরা পূরো কন্টেন্ট নিয়ে আলোচনা করেছি। বিশেষ কোনো দরকার না হলে আপনি কখোনই ঋণ করবেন না। আর ঋণ করলে ও আপনি সময়মতো পরিশোধ করার সর্বোচ্ছ চেস্টা করবেন। কারণ ঋণগ্রস্থ ব্যাক্তিকে মহান আল্লাহ তায়াল পছন্দ করেন না। যার কাছে আপনি ঋণী তার কাছে আপনি কিয়ামত পর্যন্ত দায়ি থাকবেন। মহান আল্লাহ যেনো আমাদের ঋণগ্রস্থ না করেন। আমিন। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *