মাগরিবের নামাজের সময় কতক্ষন থাকে তা আমাদের অনেকেই জানিনা। ৫ ওয়াক্ত নামাজ এর মধ্যে মাগরিব এর নামাজ রয়েছে। এই নামাজ ফরজ এবং প্রতিটি মুমিনদের জন্য এটি আদায় করা বাধ্যতামূলক। এই নামাজ আদায় না করলে শাস্তি পেতে হবে। সবথেকে উত্তম মসজিদে গিয়ে জামাআতের সাথে আদায় করা। কিন্তু অনেকেই অনেক কারনে, বিভিন্ন ব্যাস্ততা এবং বিভিন্ন সমস্যার কারণে ঠিকমতো আদায় করতে পারেন না। তবে পরবর্তিতে পড়ার চেস্টা করেন। কিন্তু অনেকেই জানেন না এই নামাজ এর সময় কতক্ষন থাকে। আজকের কন্টেন্ট এ আমরা মাগরিবের নামাজের সময় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো এবং এর ফজিলত আর আমল সহ। তাই মনোযোগ দিয়ে পড়ার অনুরোধ রইলো।
মাগরিবের নামাজের সময় কতক্ষন থাকে?
মাগরিবের নামাজের সময় সাধারনত সূর্য ডোবার পরে শুরু হয়। যখন সূর্য ডুবে যায় তার ১০-১৫ মিনিট পর নামাজ পড়া শুরু হয়। তবে এর সময় পরিবর্তিত হয় বিভিন্ন অঞ্ছল্ভেদে। টি ইসলামিক ক্যালেন্ডারের তারিখ ও স্থান অনুযায়ী পরিবর্তিত হতে পারে। অনেক উলামায়ে কেরামগণ বলেন সুর্য ডোবার পর ১ ঘন্টা ১৫ মিনিট থাকে। এই সময় এর মধ্যে আপনি মাগ্রিব এর নামাজ আদায় করতে পারবেন। এই সময় এর পড়ে এশার নামাজ এর ওয়াক্ত শুরু হয়ে যায়। তবে আপনি স্থানীয় মসজিদের ইমাম এর কাছ থেকে সঠিক তথ্য জানতে পারবেন।
আরোও পড়ুনঃ মনের আশা পূরণের দোয়া ও আমল
মাগরিবের নামাজের সময় কিভাবে নির্ধারণ করা হয়?
মাগরিবের নামাজের সময় নির্ধারণ করার জন্য ইসলামিক ক্যালেন্ডার ব্যবহার করা হয়। ইসলামিক ক্যালেন্ডার সুর্য এবং চাঁদের আলোর উপর নির্ভর করে বানানো হয় যেটিকে লুনার ক্যালেন্ডার বলা হয়।
নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে গেলে মাগরিবের নামাজ আদায় করা যাবে?
যদি নির্দিষ্ট মাগরিব সময় পার হয়ে যায় তবে মাগরিব নামাজ আদায় করা যাবে না। ইসলামে প্রতিদিনের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ সময় নির্ধারিত করা হয় এবং নামাজ সময় বিশেষ কোনো কারণ বা কাজ না হলে সঠিক সময় ছাড়া নামাজ আদায় করা উচিত নয়। তবে যদি কোন অস্থায়ী কারণে নির্ধারিত মাগরিব সময় মিস হয়ে গেলে, যেমন বৃষ্টি, অসুস্থতা,সময় সম্পর্কে না জানা, এবং অন্যান্য কারণে নামাজ সময় পরিবর্তন হয়ে গেলে তবে একটি সমস্যা নেই। একটি নামাজ সময় অপর নামাজ সময়ের সাথে সময় বিন্যাস করা যেতে পারে যদি নির্দিষ্ট সময়ে নামাজ আদায় করা সম্ভব না হয়। তবে এটি কেবলমাত্র একটি সময় সংক্রান্ত সমস্যার ক্ষেত্রে সম্ভব। আর কোনো ধরনের সমস্যা না থাকে অথবা ইচ্ছাকৃত ভাবে মিস করলে এই নামাজ পরে পড়লে হবেনা।
আরোও পড়ুনঃ তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম
মাগরিবের নামাজ কতো রাকাত?
মাগরিবের নামাজ ৭ রাকাত। এই ৭ রাকাত এর মধ্যে ৩ রাকাত হলো ফরজ, ২ রাকাত সুন্নত এবং ২ রাকাত নফল। এই সব রাকাত আপনি ধাপে ধাপে পড়তে পারবেন। তবে চেস্টা করবেন সঠিক সময়ে এবং জামাআত এর সহিত আদায় করার। অন্যসব নামাজ যে নিয়মে আদায় করেন সেই নিয়মে এই নামাজ আদায় করতে পারবেন।
মাগরিবের নামাজের নিয়ত
মাগরিবের নামাজের নিয়ত বাংলা এবং আরবিতে পড়তে পারবেন। তবে উত্তম হলো আরবিতে পড়া। নিচে এর নিয়ত দেওয়া হলোঃ
- আরবিতেঃ নাওয়াইতা নুসাল্লিয়া লিল্লাহী তায়ালা, সালাচার রাকাতাই সালাতি, মাফরিব ফারজুল্লাহি তায়ালা। মুতাওাজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা বাতি শারফাতি, আল্লাহ আকবর।
- বাংলাতেঃ আমি মাগরিবের ৩ রাকাত ফরজ নামাজ কিবলামুখী হয়ে পড়ার নিয়ত করতেছি। আল্লাহ আকবর।

মাগরিবের নামাজের গুরুত্ব এবং ফজিলত
মাগরিবের নামাজের সময় তো জানলেন। এবার জেনে নিন এর গুরুত্ব ও ফজিলত। মাগরিবের নামাজ ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পরিবর্তনীয় সালাত। এটি প্রতিদিন সূর্যাস্তের পরে আদায় করা হয়। পবিত্ত কোরআন মাজিদে মহান আল্লাহ বলেন?
হে আল্লাহর বান্দগণ, যারা মুসলিম বলে প্রত্যেক সালাত নিয়ে আমার সন্তুষ্টি পেতে চায়। তারা সব সময় আমার স্মরণ করে এবং সালাতের সময়কাল কে অনুসরণ করে সালাত আদায় করে।
(সূরা বাকারাহ, আয়াত ২২২)
আমরা সকলেই জানি দিনের শেষ ভাগ হলো মাগরিবের নামাজ। আমরা যদি মাগরিব এর নামাজের আদায় এর মাধ্যমে শেষ করি তাহলে মহান আল্লাহ আমাদের রিজিক এর মধ্যে বরকত বাড়িয়ে দেন এবং আমাদের সম্মানিত করেন।
এই নামাজের অনেকগুলো ফজিলত এর মধ্যে ২টি ফজিলত হলোঃ
- মাগরিবের নামাজ সূর্যাস্তের সময় হয় এবং সূর্যাস্তে প্রার্থনা করা হলে এটি মনোযোগ এবং ধৈর্য বাড়াতে সাহায্য করে।
- এটি সূর্যাস্তের পর পড়া হয় এবং এর মাধ্যমে মানুষ দৈনন্দিন কর্মসমূহ থেকে মুক্তি পেতে পারেন এবং তাদের মানসিক ও দৈনন্দিন সমস্যার সমাধান করতে সাহস যোগায়।
উপসংহার
মাগরিবের নামাজের সময় নিয়ে আমরা পূরো কন্টেন্ট নিয়ে আলোচনা করেছি। আশা করতেছি আপনি বুঝতে পেরেছেন কিভাবে এর সময় নির্ধারন করা হয়। এই নামাজ অনেক গুরুত্তপুর্ণ। কারণ এটি দিনের শেষ সময় এবং রাতের শুরুতে আদায় করা হয়। মহান আল্লাহ এর কাছে কোনো কিছু চাওয়ার উত্তম সময়। ধন্যবাদ সবাইকে।